আপনি নিশ্চই একজন ভাইভা প্রার্থী। আমি আজকে আপনাদের সাথে ভাইভা পরীক্ষায় ভালো করার উপায় সম্পর্কে কিছু অভিজ্ঞ ব্যক্তির পরামর্শ শেয়ার করব। ভাইভা পরীক্ষায় ভালো করার জন্য অবশ্যই আপনাকে অন্যদের থেকে ট্রিকি ওয়েতে আগাতে হবে।
বিসিএস, ব্যাংক সহ অন্যান্য চাকরির ভাইভার পরীক্ষায় সাধারনত ফেল করাবে না। হ্যা আপনি যদি ভাল পারফর্ম করেন তাহলে আপনাকে বেশি নম্বর দেবে।
ভাইভা পরীক্ষা
ভাইভাতে সাধারনত দুুই ধরনের প্রশ্ন হয়। ১) ওপেন এনডেড। ২) ক্লোজ এনডেড। ভাইভাতে মূলত ওপেন এনডেড পরীক্ষায় উপর আপনার মার্ক পাওয়া নির্ভর করে। এই প্রশ্নগুলো কতটা সুন্দর ভাবে উত্তর দিতে পারছেন, কতটা স্মার্টটি উত্তর দেন, মেন্টাল ফিটনেজ কতটুকু ইত্যাদি যাছাই করা হয়।
ভাইবা পরীক্ষার গুরুত্ব
অনেকেই যে ভুলটা করেন, ভাইবা পরীক্ষাকে তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করেন। ভাবেন এইটা কেন ব্যাপার না। মনে রাখবেন, যে অনুশীলনের সময় যত ঘাম ঝড়াবেন, ফাইনাল আউটপুট তত সহজে পাবেন। ভাইভাতে কোন ভাবেই প্রস্তুতিহীন যাওয়া উচিত না। একটা ভাল ভাইভা আপনাকে কাক্ষিত স্থানে নিয়ে যাবে।
ভাইবা সম্পর্কে সঠিক ধারনা
- বিসিএস, ব্যাংক সহ অন্যান্য সরকারি নিয়োগের ভাইভা পরীক্ষায় সাধারনত ভাইভাতে ফেল করায় না।
- ভাইভাতে একটি নির্দিষ্ট মার্ক বরাদ্দ থাকে।
- ভাইভাতে যে সকল প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে সেটা বাধ্যতামূলক নয়। এবং সকল প্রশ্ন যে পারতে হবে এমনটা সঠিক নয়।
- ভাইভাতে যারা বসেন প্রত্যেকেই যে প্রশ্ন করেন তার উত্তর সম্পর্কে শতভাগ উত্তর জানেন। আপনি ভুলভাল কোন উত্তর করবেন না।
ভাইভা ভালো করার টিপস
১। উত্তর দেওয়ার সময় অবশ্যই যথাযথ ও প্রিসাইস করে উত্তর দিবেন। অতিরিক্ত কথা না বলাই উত্তম।
২। মুখস্ত কোন প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার ক্ষেত্রেও একটু সময় নিয়ে ভাবার ভান করে উত্তর দেন।
৩। ভাইভার জন্য একটি নোট খাতা তৈরি করুন। এবং প্রয়োজনীয় অংশ নোট করুন।
৪। নিজের সাবজেক্ট এর বেসিক স্ট্রং করুন।
৫। জাতীয় বিষয়াবলির সম্পর্কে সম্যক ধারনা রাখুন।
৬। মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে খুটিনাটি জানুন।
৭। সাম্প্রতিক বিষয়াবলির জন্য পেপার পড়া শুরু করুন। এছাড়াও বিভিন্ন কথার উদ্ধৃতিতে পেপারের রেফারেন্স দিন।
আরও দেখুন: মৌখিক পরিক্ষার পোশাক-পরিচ্ছেদ।
ভাইভা পরীক্ষায় বোর্ড যা দেখে
- একজন যোগ্য পার্থীকে অবশ্যই সৎ, নেতৃত্ব, পরিশ্রমী কি না? কারন সৎ ব্যক্তিকে সবাই চায়। এবং আপনার মাঝে নেতৃত্ব দানের ক্ষমতাকে দেখতে চাই। সর্বপোরি আপনি পরিশ্রমী কিনা সেটাও তারা ভাল করে দেখবে। আপনার কথার মাধ্যমে সেটা বুঝে নিবে।
- আপনার আউটলুক, ফিটনেস, ড্রেসআপ ইত্যাদি। একটা প্রবাদ আছে আগে দর্শনদারি, পরে গুনবিচারী।
- আপনার আত্মবিশ্বাস যা আপনাকে কাক্ষিত স্থানে নিয়ে যাবে। এটা আপনার উত্তরের সাথে সাথে বোর্ড এটা মেজার করে।
- আপনি দায়িত্বশীল কি না? এখন আপনি হয়ত ভাববেন চাকরি না দিয়ে কিভাবে দায়িত্বশীল কিনা? আপনার কথার মাঝে তারা সেটা খুজে নিবে। আপনি ট্রিকি ওয়েতে আপনার উত্তর সাজাবেন।
ভাইভার আগের রাত্রে যা করা দরকার
- পর্যাপ্ত পরিমান ঘুমানো। টেনশন না করা।
- সকল পেপার রেডি করে রাখা। এবং চেক করা।
- বাসা দুরে থাকলে এক দিন আগেই কাছাকাছি অবস্থানে থাকা।
আর পড়ুন: মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে ভাইভা প্রশ্ন।
কিছু কমন ভুল আমরা যা ভাইভাতে করি
প্রথমত যে ভুলটা আমরা করি, একজন ভাইবা থেকে বের হওয়ার সময় তাকে তার ভাইবা কেমন হল, কি প্রশ্ন করল এটা জানার জন্য খুব পাগল হয়ে যায়। এতে আপনার নিজেরই ক্ষতি। এর ফলে আপনি ডিপ্রেশনে ভুগবেন। এবং নিজের কনফিডেন্স আস্তে আস্তে কমে যাবে।
আপনি নিজে বাংলাতে ভাইভা পরীক্ষা দিবেন কিন্তু প্রথমেই রুমে ঠোকার পূর্বে বললেন May I come in Sir? এক্ষেত্রে যে ভুলটা হলো বোর্ড আপনাকে ইংরেজিতে প্রশ্ন করবে। আপনি যদি ইংরেজিতে না কথা বলতে পারেন, তাহলে আপনার প্রতি নেভেটিভ ইমপ্রেশন তৈরি হবে।
রাষ্ট্রপতির নাম বললে মহামান্য বলা এবং প্রধানমন্ত্রীর নাম বললে মাননীয় কথাটি বলতে হবে। আমরা এই ভুলটা বেশি করি। মুক্তিযোদ্ধাদের নাম বলার পূর্বে বীরমুক্তিযোদ্ধা বলা।
বাচনভঙ্গি ও আই কনটাক্ট যথাযথ না হওয়া। যার প্রশ্নের উত্তর দিবেন তার চোখের দিকে তাকিয়ে কথা বলতে হয়।
নিজের উত্তরের উপর নিজের কনফিন্স না থাকা। আপনাকে অবশ্যই কনফিনেন্সের সাথে উত্তর করতে হবে।
এনআইডি বিষয়ক তথ্য জানতে ভিজিট করুন: NID Services
শেষকথা
ভাইভা পরীক্ষায় ভালো করার উপায় শুধুমাত্র লেখাপড়ার মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়। এর বাহিরের কিছু বিষয় রয়েছে, যেমন আপনার পেজেন্টেশন, আচরন, কনফিডেন্স ও বোর্ডের মনোভবের উপর নির্ভর করে। তাই আপনি ধীরস্থির হয়ে ভাইবা দিন এবং নিজের উপর আস্থা রাখুন। রিজিকে থাকলে চাকরি হবে ইনশাআল্লাহ। আপনার জন্য শূভ কামনা রইল।